এই উপজেলাটি জেলা সদর থেকে পশ্চিম দিকে ২৫’৩৮-২৫’৫৩ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৮৯’২৭-৮৯’৩৮ পুর্ব দ্রাঘিমা অংশের মধ্যে অবস্থিত। এ উপজেলার উত্তরে লালমনিরহাট জেলা,পশ্চিমে রংপুর জেলার, কাউনিয়া উপজেলা দক্ষিণে উলিপুর উপজেলা, এবং পুর্বে কুড়িগ্রাম সদর উপজেলা। এই উপজেলার মোট আয়তন ১৬৫.৫৯ বর্গ কিলোমিটার।[২]
রাজারহাটের নাম কেন রাজারহাট হলো, তা নিয়ে ব্যাপক মতভেদথাকা সত্বেও কেউই সঠিক কারণটি বের করতে পারেননি। অনেকে বলেন ১২শ শতকের প্রথম দিকে রংপুরে সেন বংশের শাসন শুরু হয় । সেন বংশের রাজা ছিলেন নীলধবজ চন্দ্র সেন ও নীলম্বর সেন । রাজা নীলাম্বর সেন ছিলেন খুব শক্তিশালী। তিনি অনেক যুদ্ধে জয়লাভ করেছিলেন। তার রাজধানী ছিল চতলা নামক স্থানে। এ চতলা বর্তমানে রাজারহাট উপজেলার বিদ্যানন্দ ইউনিয়নে অবস্থিত। এখানে ছিল শক্তিশালী রাজা নীলাম্বরের দুর্গ। ১৪১৮খ্রিষ্টাব্দে গৌড়ের সুলতান হোসেন শাহ আক্রমণ করেন নীলম্বরের রাজ্য। তিস্তানদীর পাড়ে উভয় পক্ষের তুমুল যুদ্ধ হয়েছিল। এ যুদ্ধে রাজা নীলম্বর পরাজিত হয়ে আসামে পালিয়ে যায়। ধবংসপ্রাপ্ত হয় নীলম্বরের রাজধানী। নীলম্বরের বিরুদ্ধে যুদ্ধ পরিচালনা করেন সুলতান সুলতান হোসেন শাহের পুত্র নাসিরউদ্দিন আবুল মোজাফফর নশরত শাহ্। স্থানীয় লোকজন রাজার স্মৃতি ধরে রাখার জন্য এ এলাকার নাম করণ করেছেন রাজারহাট।
আবার অনেকের মতে তৎকালীন সময়ে রাজারহাট বলে কোন স্থানের নাম ছিল না। বৃটিশ আমলে তৈরি রেল লাইন দিয়ে ধীরগতিতে চলাচল করত বাম্পীয় ইঞ্জিনবিশিষ্ট লেংটাগাড়ী। গাড়ী যে স্থানে থামত তার নাম ছিল পয়ামারী। এ পয়ামারীর পাশে ছিল দুই একটি দোকান। পাঙ্গা রাজ বংশের শেষ রাজা দেবেন্দ্র নারায়ন মেকুটারী মৌজার প্রজাদের সাথে কুশল বিনিময়ের জন্যমাঝে মাঝে আসতেন। রাজা দেবেন্দ্র নারায়ণ আসার কারণে সেখানে দোকান পাট বাড়তে থাকে। তার ফলে পাঙ্গা রাজার খাস জমিতে হাটটি লাগানো হয়। জায়গাটি পাঙ্গা রাজার তাই হাটটির নাম করণ করা হয়েছে রাজারহাট । রাজারহাটের নামকরণ ও ইতিহাস প্রসঙ্গে এই মতবাদটি আলোচিত ও সার্বজনীন ।
পূর্বে রাজারহাট ছিল একটি ইউনিয়ন মাত্র। তদানিন্তন সময়ে পুলিশ প্রশাসনের প্রয়োজন হেতু পাকিস্তান সরকার এখানে একটি পুলিশ ফাঁড়ি স্থাপন করে। সত্তরের আন্দোলনের সময়ে সেটি উঠিয়ে দেয়া হয়।স্বাধীনতার ৭ বছর পর তৎকালীন প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান ট্রেন যোগে কুড়িগ্রাম সফরকালে অত্র এলাকার জন সাধারণের কথা বিবেচনা করে এ ইউনিয়নটিকে থানায় উন্নীত করনের প্রতিশ্রুতি প্রদান করেন। পরে উলিপুর থানার অধিনস্ত ৪টি ইউনিয়ন ও লালমনিরহাট থানার ৩টি ইউনিয়নসহ মোট ৭টি ইউনিয়নের সমন্বয়ে রাজারহাট থানা ঘোষণা হয়। পরবর্তী সময়ে রাজারহাট উপজেলা ঘোষণা হয় এবং ১৯৮৩ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর রাজারহাট উপজেলা কার্যক্রম শুরু হয় ও একটি দ্বিতল ভবন নির্মাণ করা হয়।[৩]
পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নে: মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, এটুআই, বিসিসি, ডিওআইসিটি ও বেসিস